৭২ ঘণ্টার মধ্যে ভারত ছাড়ার নির্দেশ

ভারত-নিয়ন্ত্রিত জম্মু ও কাশ্মীরের পেহেলগামে সাম্প্রতিক সন্ত্রাসী হামলায় ২৬ জন নিহত হওয়ার পর প্রতিবেশী পাকিস্তানের বিরুদ্ধে একের পর এক কঠোর সিদ্ধান্ত নিচ্ছে নয়াদিল্লি। এরই ধারাবাহিকতায় এবার পাকিস্তানি নাগরিকদের জন্য সব ধরনের ভিসা পরিষেবা স্থগিত ঘোষণা করেছে ভারত। এর মধ্যে ভারতীয় মেডিকেল ভিসাও অন্তর্ভুক্ত।

বৃহস্পতিবার (২৪ এপ্রিল) ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক বিবৃতিতে জানানো হয়, পাকিস্তানি নাগরিকদের জন্য জারি করা সকল বৈধ ভারতীয় ভিসা আগামী রবিবার থেকে বাতিল হয়ে যাবে। যাদের কাছে ইতোমধ্যে ভিসা রয়েছে, তারা আগামী ৭২ ঘণ্টার মধ্যে ভারত ত্যাগ করতে বাধ্য থাকবেন।

ভিসা বাতিলের পাশাপাশি পাকিস্তানি নাগরিকদের জন্য নতুন করে আর কোনও ধরনের ভারতীয় ভিসা ইস্যু করা হবে না। এর অর্থ, এখন থেকে তারা ভারত ভ্রমণের জন্য কোনও ধরনের বৈধ নথি পাবেন না।

এর আগের দিন, অর্থাৎ বুধবার (২৩ এপ্রিল), ভারত সরকার পাকিস্তানের বিরুদ্ধে পাঁচটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ গ্রহণ করে।

ভারতের পররাষ্ট্রসচিব বিক্রম মিশ্রি জানান, ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যকার সিন্ধু পানি চুক্তি আপাতত অনির্দিষ্টকালের জন্য স্থগিত করা হচ্ছে। এই সিদ্ধান্তের ফলে পাকিস্তান যে পরিমাণ পানি পাওয়ার কথা ছিল, তা এখন বাধাগ্রস্ত হবে।

দ্বিতীয় পদক্ষেপ হিসেবে ভারতের সঙ্গে পাকিস্তানের প্রধান স্থলসীমান্ত আটারি-ওয়াঘা বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। এই সীমান্ত দিয়ে ইতিমধ্যে যারা ভারতে প্রবেশ করেছেন, তাদের ১ মের মধ্যে ফিরে যেতে বলা হয়েছে।

তৃতীয় সিদ্ধান্তে, নয়াদিল্লিতে অবস্থিত পাকিস্তান হাইকমিশনে কর্মরত সামরিক, নৌ ও বিমান বাহিনীর উপদেষ্টাদের অবাঞ্ছিত ঘোষণা করে বহিষ্কার করা হয়েছে। পাশাপাশি, ইসলামাবাদে ভারতের হাইকমিশনে নিযুক্ত ভারতীয় সামরিক কর্মকর্তাদেরও দেশে ফিরিয়ে আনা হচ্ছে।

চতুর্থ পদক্ষেপ হিসেবে সীমান্তচৌকি বন্ধের পাশাপাশি পাকিস্তানি নাগরিকদের ভারতে প্রবেশ সাময়িকভাবে নিষিদ্ধ করা হয়েছে। এর ফলে সব ধরনের সার্ক ভিসা বাতিল করা হয়েছে। বর্তমানে যারা এই ভিসায় ভারতে রয়েছেন, তাদের ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে দেশে ফেরত যেতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

পঞ্চম এবং শেষ সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, উভয় দেশের হাইকমিশনগুলোতে কর্মরত লোকবলের সংখ্যা ৫৫ থেকে কমিয়ে ৩০ জনে নামিয়ে আনা হবে।

কাশ্মীরের পেহেলগামে বর্বরোচিত সন্ত্রাসী হামলার পর ভারতের এই পদক্ষেপগুলো পাকিস্তানের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের ওপর বড় ধরনের প্রভাব ফেলবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। বর্তমানে দক্ষিণ এশিয়ার দুই পরমাণু শক্তিধর দেশের মধ্যে উত্তেজনা চরমে পৌঁছেছে।

তথ্যসূত্র: দৈনিক জনকণ্ঠ

Leave a Reply