সিন্ধু নদে বাঁধ দিলেই সামরিক হামলা করবে পাকিস্তান

কাশ্মীরের পেহেলগামে সাম্প্রতিক হামলার জেরে ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে আবারও চরম উত্তেজনা দেখা দিয়েছে। পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ মোড় নিয়েছে পাকিস্তানের প্রতিরক্ষামন্ত্রী খাজা মোহাম্মদ আসিফের দেওয়া সামরিক হুঁশিয়ারির পর। তিনি স্পষ্ট করে জানিয়েছেন, ভারত যদি সিন্ধু নদের ওপর বাঁধ নির্মাণের চেষ্টা করে অথবা নদীর স্বাভাবিক পানি প্রবাহ বন্ধ বা অন্যদিকে সরানোর উদ্যোগ নেয়, তবে পাকিস্তান সামরিক পদক্ষেপ নিতে দ্বিধা করবে না।

এক সাক্ষাৎকারে প্রতিরক্ষামন্ত্রী আসিফ বলেন, “সিন্ধু নদ বন্ধ করে দেওয়া বা পানি অন্য পথে প্রবাহিত করাও এক ধরনের আগ্রাসন। এর ফলে ক্ষুধা ও তৃষ্ণায় লাখ লাখ মানুষের মৃত্যু হতে পারে।”

পাকিস্তানের সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকেও ভারতকে কঠোর বার্তা দেওয়া হয়েছে। রাওয়ালপিন্ডিতে সেনা সদর দপ্তরে সেনাপ্রধান জেনারেল আসিম মুনিরের নেতৃত্বে অনুষ্ঠিত বিশেষ কর্পস কমান্ডারস সম্মেলনের পর সেনাবাহিনী জানায়, ভারত যদি যুদ্ধ পরিস্থিতি তৈরি করে, তবে এর জবাবে কঠোর পদক্ষেপ নেওয়া হবে।

উত্তেজনার পরিপ্রেক্ষিতে পাকিস্তান অধিকৃত কাশ্মীরের ভারত সীমান্তবর্তী ১৩টি নির্বাচনী এলাকার বাসিন্দাদের জন্য দুই মাসের খাদ্য, ওষুধ ও নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের মজুদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। আজাদ কাশ্মীরের প্রধানমন্ত্রী চৌধুরী আনোয়ারুল হক এই নির্দেশনা দিয়ে জানান, এজন্য ১০০ কোটি রুপির একটি বিশেষ তহবিল গঠন করা হয়েছে।

সীমান্তবর্তী স্কুলগুলোতে জরুরি পরিস্থিতিতে আত্মরক্ষার প্রশিক্ষণ চালু করা হয়েছে এবং বাসিন্দাদের বাংকার নির্মাণের আহ্বান জানানো হয়েছে। অনেক পরিবার সম্ভাব্য যুদ্ধের আশঙ্কায় নিরাপদ স্থানে চলে যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে।

এদিকে উত্তরের সীমান্ত এলাকায় ভারতীয় বিমান বাহিনী ব্যাপক সামরিক মহড়া চালিয়েছে। দুই দেশের পাল্টাপাল্টি হুঁশিয়ারি এবং সামরিক প্রস্তুতিতে সীমান্ত অঞ্চলে চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে।

এদিকে পাকিস্তানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ভারতীয় সংবাদমাধ্যমের একটি দাবি নাকচ করে দিয়েছে, যেখানে বলা হয়েছিল পাকিস্তানি নাগরিকদের জন্য ওয়াঘা সীমান্ত বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। পাকিস্তান জানিয়েছে, ৩০ এপ্রিল পর্যন্ত ওয়াঘা-আটারি সীমান্ত খোলা ছিল এবং ভবিষ্যতেও ভারতের অনুমতির ভিত্তিতে সীমান্ত ব্যবহারে প্রস্তুত রয়েছে তারা।

কাশ্মীর ইস্যুকে কেন্দ্র করে ভারত-পাকিস্তান সম্পর্ক আবারও এক চরম উত্তেজনার দিকে এগোচ্ছে। দুই দেশের সামরিক প্রস্তুতি, কড়া ভাষার হুঁশিয়ারি ও কাশ্মীর সীমান্তে সাধারণ মানুষের আতঙ্ক — সব মিলিয়ে পরিস্থিতি অত্যন্ত জটিল ও উদ্বেগজনক হয়ে উঠেছে।

তথ্যসূত্র: দৈনিক জনকণ্ঠ

Leave a Reply