ইলন মাস্ক চলতি বছর ভারতে যেতে আগ্রহী

যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ঘনিষ্ঠ সহযোগী এবং বিশ্বখ্যাত প্রযুক্তি উদ্যোক্তা ইলন মাস্ক জানিয়েছেন, তিনি চলতি বছর ভারত সফর করতে আগ্রহী। শনিবার এক্স প্ল্যাটফর্মে দেওয়া এক পোস্টে মাস্ক জানান, ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে ফোনালাপের পর তিনি এ সিদ্ধান্তে এসেছেন।

মাস্ক তার পোস্টে লেখেন, “প্রধানমন্ত্রী মোদির সঙ্গে কথা বলা আমার জন্য একটি সম্মানজনক অভিজ্ঞতা। আমি এ বছর ভারত সফরের জন্য অপেক্ষা করছি।”

ইলন মাস্কের এই ফোনালাপের পর প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিও এক বিবৃতিতে জানান, দুই নেতার মধ্যে মহাকাশ, পরিবহন ও প্রযুক্তি সংক্রান্ত বিষয়ে বিস্তৃত আলোচনা হয়েছে। তিনি বলেন, “আমরা প্রযুক্তি ও উদ্ভাবনের ক্ষেত্রে সহযোগিতার বিপুল সম্ভাবনা নিয়ে আলোচনা করেছি। এই খাতে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আমাদের অংশীদারি এগিয়ে নিতে ভারত প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।”

ইলন মাস্ক নিজেকে প্রধানমন্ত্রী মোদির একজন ‘ভক্ত’ হিসেবে উল্লেখ করেছেন। আগেও তার ভারত সফরের পরিকল্পনা ছিল, তবে ২০২৩ সালে টেসলার দায়িত্বের কারণে সেটি পিছিয়ে যায়। ২০২৪ সালে সফরের ঘোষণা দিলেও তা বাস্তবায়িত হয়নি। অবশেষে ২০২৫ সালেই তার সফরের সম্ভাবনা জোরালো হয়ে উঠেছে।

বর্তমানে ইলন মাস্কের ব্যবসায়িক দৃষ্টি ভারতের দিকে নিবদ্ধ। টেসলার বৈদ্যুতিক গাড়ি ভারতের বাজারে আনার পাশাপাশি স্টারলিংক ইন্টারনেট পরিষেবাও সম্প্রসারণের পরিকল্পনা রয়েছে।

ভারত ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে একটি পারস্পরিক লাভজনক বাণিজ্য চুক্তি নিয়ে আলোচনা চলছে, যার মাধ্যমে টেসলা বিশেষভাবে উপকৃত হতে পারে। শুল্ক কাঠামো সহজ হলে ভারতীয় বাজারে টেসলার গাড়ি আরও সহজে প্রবেশ করতে পারবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

টেসলা ইতিমধ্যেই ভারতের মুম্বাইয়ের বান্দ্রা কুরলা কমপ্লেক্সে ৪,০০০ বর্গফুট জায়গা ভাড়া নিয়েছে, যেখানে পার্কিংয়ের ব্যবস্থাও রয়েছে। এ ছাড়া দিল্লি ও মুম্বাইতে আরও জায়গা ভাড়ার বিষয়ে আলোচনা চলছে বলে বিভিন্ন প্রতিবেদনে জানা গেছে।

বিশ্বে ইন্টারনেট ব্যবহারে শীর্ষে রয়েছে ভারত। সেইসঙ্গে সোশ্যাল মিডিয়া ও ফিনটেক খাতেও দেশটির অগ্রগতি চোখে পড়ার মতো। এই বাজার স্টারলিংকের জন্য অত্যন্ত সম্ভাবনাময়।

তবে এখনো কিছু নিরাপত্তা ও নিয়ন্ত্রক বাধা অতিক্রম করতে হচ্ছে প্রতিষ্ঠানটিকে। সম্প্রতি ভারতের কেন্দ্রীয় বাণিজ্যমন্ত্রী পীযূষ গোয়াল স্টারলিংকের শীর্ষ কর্মকর্তাদের সঙ্গে একটি বৈঠক করেছেন। সেখানে ভারতে বিনিয়োগ পরিকল্পনা নিয়ে আলোচনা হয়েছে।

ইলন মাস্কের ভারত সফর এবং তার ব্যবসায়িক আগ্রহ শুধু দুই দেশের কূটনৈতিক সম্পর্কের উন্নয়নেই নয়, বরং প্রযুক্তি ও উদ্ভাবনের ক্ষেত্রেও নতুন দিগন্ত উন্মোচন করতে পারে। মোদি-মাস্ক আলোচনার এ ধারা অব্যাহত থাকলে ভারত-যুক্তরাষ্ট্র সম্পর্ক আরও সুদৃঢ় হবে, সেইসঙ্গে ভারতীয় জনগণও উপকৃত হবে আধুনিক প্রযুক্তি ও সেবার প্রসারে।

তথ্যসূত্র: দৈনিক কালের কণ্ঠ

Leave a Reply