নব্বইয়ের দশকে বলিউড মাতানো জনপ্রিয় অভিনেত্রী শিল্পা শেঠি বর্তমানে সেভাবে সিনেমার পর্দায় নিয়মিত না হলেও ভারতের সর্বোচ্চ আয়করদাতাদের তালিকায় তার নাম প্রতিবছরই দেখা যায়। কারণ, অভিনয়ই তার একমাত্র আয়ের উৎস নয়। বরং ব্যবসায়িক খাতেই এখন শিল্পার সাফল্য ও আয়ের মূল ভিত্তি।
সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে শিল্পা শেঠি তার রাজকীয় জীবনের পেছনের রহস্য এবং সফলতার গল্প শেয়ার করেন। অভিনেত্রী জানান, তার জীবনের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্তটি নিয়েছিলেন প্রায় আট বছর আগে। সে সময় একটি প্রসাধনী সংস্থার বিপণন মুখ হিসেবে কাজ করার প্রস্তাব পান তিনি। তবে সেই প্রতিষ্ঠান তখন এতটাই ছোট ছিল যে, শিল্পার পারিশ্রমিক মেটানোর ক্ষমতাই তাদের ছিল না।
শিল্পা বলেন, “ওরা আমার কাছে এসেছিল। আমার ভালো লেগেছিল। কিন্তু একজন ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসেডর নিয়োগ করার মতো সামর্থ্য ওই সংস্থার ছিল না। তখন আমিই ওদের অংশীদার হওয়ার প্রস্তাব দেই।” এই সাহসী সিদ্ধান্তই তাকে এনে দেয় বিপুল অর্থনৈতিক সাফল্য।
২০১৮ সালে শিল্পা শেঠি মাত্র ৬.৭ কোটি টাকা বিনিয়োগ করে সংস্থাটিতে ১৬ লক্ষ শেয়ার কিনেছিলেন। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে প্রতিষ্ঠানটি বিশাল লাভজনক সংস্থায় রূপ নেয় এবং ২০২৩ সালে ‘ইউনিকর্ন’ মর্যাদা (মূল্য ১০০ কোটির বেশি) অর্জন করে। ওই বছরই শিল্পা তার ১৩.৯৩ লক্ষ শেয়ার বিক্রি করে লাভ করেন প্রায় ৪৫ কোটি ১৩ লক্ষ টাকা।
২০২৫ সালের ১৭ এপ্রিল পর্যন্ত তথ্য অনুযায়ী, ওই সংস্থার শেয়ারের বাজারমূল্য ২৩৬ টাকা। এখনও শিল্পা শেঠি সংস্থাটির ২.৩ লক্ষ শেয়ারের মালিক। বর্তমানে তার বিনিয়োগ মূল্য প্রায় ৫ কোটি ৪২ লক্ষ টাকায় দাঁড়িয়েছে। বিনিয়োগের এই সাফল্যই তাকে অভিনয় ছাড়াও আর্থিক দিক থেকে প্রতিষ্ঠিত করেছে।
যদিও বড়পর্দায় শিল্পাকে এখন খুব একটা দেখা যায় না, তবে সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে অনুরাগীরা তার ব্যক্তিগত জীবন সম্পর্কে হালনাগাদ থাকেন। শরীরচর্চা ও যোগাসনে সময় দেওয়ার পাশাপাশি, দিনের বড় একটা সময় তিনি পরিবারের সঙ্গে কাটাতে পছন্দ করেন। একইসঙ্গে নিজের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান পরিচালনায়ও তিনি ব্যস্ত সময় পার করছেন।
শিল্পা শেঠির এই অনন্য ব্যবসায়িক সাফল্যের গল্প নতুন প্রজন্মের জন্য হতে পারে অনুপ্রেরণার উৎস। অভিনয় থেকে ব্যবসায় পা রেখে কেবল নিজের আর্থিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করেননি তিনি, বরং নারীদের জন্যও তৈরি করেছেন এক সাহসী উদাহরণ—জানিয়ে দিয়েছেন, সময়োপযোগী সিদ্ধান্ত ও দূরদর্শিতাই সাফল্যের চাবিকাঠি।
তথ্যসূত্র: কালের কণ্ঠ